কিস্তিতে মোটরবাইক কেনার প্রক্রিয়াটা আসতে আসতে বেশ সারা ফেলেছে সাধারণ মানুষের কাছে। ভারতের হিরো মোটর করপোরেশনের বাংলাদেশের পরিবেশক নিলয় মটরস লিমিটেড সহজ শর্তে কিস্তিতে মোটরসাইকেল বিক্রয় শুরু করেছে এক বছর আগে। তারা তিন মাসের কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করলে কোন ধরণে চার্জ বা লাভ নেয় না।
প্রতিষ্ঠানটির শান্তিনগর শাখার বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের জোনাল ম্যানেজার বলেন, ‘যাদের একবারে পুরো টাকা দিয়ে বাইক ক্রয় করার কষ্ট করা তাদের কথা চিন্তা করে হিরো মোটর কিস্তিতে বাইক কেনার ব্যবস্থা করেছে। এটার আর একটা দিক আছে সেটা হলো সর্বস্তরের মানুষের কাছে হিরো বাইক ছড়িয়া।’
তিনি বলেন, ক্রেতারা সর্বনিম্ন ৩২ হাজার টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে হিরোর মোটরসাইকেল বুঝে নিতে পারবেন। ৩ মাসে মূল্য পরিশোধ করলে নগদ সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ছয় ও ১২ মাসের সহজ কিস্তির সুবিধা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘হিরোর আটটি মোটরসাইকেলে কিস্তি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো হলো- এইচএফ ডিলাক্স কিক, এইচএফ ডিলাক্স সেলফ, এইচএফ প্লাস সেলফ, স্প্লেন্ডর প্লাস সেলফ, আইস্মার্ট-১১০, গ্ল্যামার ডিস্ক, ইগলিটর, অ্যাচিভার, হাঙ্ক ডিডি, এক্সট্রিম স্পোর্টস এসডি ও এক্সট্রিম স্পোর্টস ডিডি।
এসব বাইকে তিন, ছয় ও ১২ মাসের কিস্তি সুবিধা মিলবে। তিন মাসে কিস্তি পরিশোধ করলে কোন ধরণের চার্জ দিতে হয় না। ছয় মাসের কিস্তি সুবিধা নিতে হলে মোটরসাইকেলের মূল্যের ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট করতে হবে। বাকিটা কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য। অন্যদিকে ১২ মাসের কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনতে হলে বাইকের মূল্যের ৫০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে।
ছয় মাসের কিস্তিতে নিলে- ইচএফ ডিলাক্স কিক কাস্টে ৬ হাজার ৯৮০ টাকা, এইচএফ ডিলাক্স সেলফ ৭ হাজার ৮১০ টাকা, স্প্লেন্ডর প্লাস সেলফ ৭ হাজার ৮৯০ টাকা, প্লেজার ১০ হাজার ৯০ টাকা, আইস্মার্ট-১১০ নয় হাজার ২৬০ টাকা, গ্ল্যামার ডিস্ক ১০ হাজার ১৬০ টাকা, ইগলিটর ১০ হাজার ৭৫০ টাকা, অ্যাচিভার ১১ হাজার ৫০০, হাঙ্ক এসডি ১২ হাজার ৬১০ টাকা, হাঙ্ক ডিডি ১৪ হাজার ১০ টাকা ও এক্সট্রিম স্পোর্টস ডিডি ১৬ হাজার ১১০ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
১২ মাসের কিস্তিতে নিলে- ইচএফ ডিলাক্স কিক কাস্টে ৯ হাজার ৯৯০ টাকা, এইচএফ ডিলাক্স সেলফ ১১ হাজার ২৩০ টাকা, স্প্লেন্ডর প্লাস সেলফ ১১ হাজার ৩৯০ টাকা, প্লেজার ১৪ হাজার ৪১০ টাকা, আইস্মার্ট-১১০ তের হাজার ২৩০ টাকা, গ্ল্যামার ডিস্ক ১৪ হাজার ৫১০ টাকা, ইগলিটর ১৫ হাজার ৩৯০ টাকা, অ্যাচিভার ১৬ হাজার ৯০০, হাঙ্ক এসডি ১৮ হাজার ১০ টাকা, হাঙ্ক ডিডি ১৯ হাজার ৬১০ টাকা ও এক্সট্রিম স্পোর্টস ডিডি ২৩ হাজার ৫১০ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
প্রথমে ১৫০ টাকা দিয়ে আবেদন ফর্ম নিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের পর তা যাচাই বাচাই করে ক্রেতাকে কিস্তিতে মোটরসাইকেল দিয়ে দেয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীদের কাছে কিস্তিতে মোটরসাইকেল বিক্রি করা হয় না বলে জানান কোম্পানিটির এ শাখা ব্যবস্থাপক।
কিস্তিতে হিরোর বাইক কিনতে যা যা লাগবে- ১. জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা পাসপোর্টের ফটোকপি। ২. স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানার প্রমাণপত্র স্বরূপ জন্মনিবন্ধন সনদ; বাসা ভাড়ার চুক্তিপত্র কিংবা ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি। ৩. চাকরিজীবী হলে বেতনের স্লিপ কিংবা হিউম্যান রিসোর্সের চিঠি।
৪. ব্যবসায়ী হলে ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট কিংবা ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন। চাকরিজীবী হলে ছঢ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, তিন মাসের বেতনের স্লিপ, ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন কিংবা হিউম্যান রিসোর্সের পক্ষ থেকে চিঠি।
হিরোর কিস্তিতে বিক্রীত সব বাইকের রেজিস্ট্রেশন হবে নিলয় মটরস লিমিটেডের নামে। কিস্তি শেষ হলে নাম পরিবর্তন করে নেয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে নাম পরিবর্তনের খরচের অর্ধেক বহন করবে প্রতিষ্ঠান, বাকিটা মোটরসাইকেলের মালিককে দিতে হবে। কেউ মোটরসাইকেল কিনে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারলে আইনানানুগ ব্যবস্থার মাধ্যমে বিক্রীত মোটরসাইকেল গ্রাহকদের কাছ থেকে নিয়ে নেবে নিলয় মটরস।
Facebook Comments