শস্যভাণ্ডার খ্যাত মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। দিগন্ত জোড়া সবুজের ক্ষেতে ফুলের ছড়ায় দোল দিচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন।
কিন্তু উঠতি আগাম বন্যায় কাচা ভূট্টা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা ও শঙ্কায় পড়েছেন কৃষক। তাদের সেই স্বপ্ন তলিয়ে যাচ্ছে ধলেশ্বরী নদীসহ বেশ কয়েকটি শাখা নদীর জোয়ারের পানিতে।
আগাম বন্যার প্রভাবে জোয়ারের পানি নদী দিয়ে ঢুকে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন শষ্য ক্ষেতে। বিশেষ করে উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের, বরাইদ, কৌড়ি, উত্তর ছনকাসহ বিভিন্ন এলাকার ক্ষেতের ভূট্টা তলিয়ে গেছে। আগাম বন্যায় কাচা ভূট্টা তলিয়ে যাওয়ায় অনেকেই গাছ সহ কেটে গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে।
তলিয়ে যাওয়া ভূট্টা নিয়ে কৃষক পড়েছেন বিপাকে। অনেকেই আধাপাকা ভূট্টা কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অপর দিকে করোনার প্রভাবে কৃষি শ্রমিকেরও সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার প্লাবিত অঞ্চলে ২০ ভাগ জমির আধা পাকা ভূট্টা ঘরে তুলেছেন কৃষক। বাকি ৮০ ভাগ ভূট্টা নিয়ে চরম শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন তারা।
আগ সাভার এলাকার মৃত কাদের হোসেনের ছেলে গোলাপ জানান, এবার ৩০০ শতাংশ ভূট্টা রোপন করেছিলাম। নিয়মানুযায়ী পরিচর্যা করে ভালই ফলন আশা করেছিলাম। কিন্তু আগাম বন্যার পানিতে সব ডুবে গেছে। ভূট্টা একদম কাচা বলে ভাঙা সম্ভব হচ্ছে না অন্য দিকে ভূট্টা পানিতে নষ্ট হয়ে গেলে পথে বসা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। করোনায় আয় রোজি সব বন্ধ ভূট্টাই একমাত্র সম্বল ছিল।
উত্তর ছনকা কৃষক রাসেল মিয়া বলেন, অন্য বছর ভূট্টা ঘরে তোলার প্রায় এক দেড় মাস পর জমিতে পানি আসে। এবার ভূট্টা পাকার আগ মুহূর্তে হঠাৎ পানি এসে আমাদের সর্বস্বান্ত করে ফেলেছে। যেভাবে বন্যার পানি বাড়ছে এতে সব ভূট্টা পানিতে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন এলাকার এরকম একাধিক কৃষক তাদের স্বপ্ন নিয়ে হতাশ এবং ভূট্টা নিয়ে বিপাকে আছেন অনেকেই বলেও তিনি জানান।
আগ সাভার গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ২২০ শতাংশ ভূট্টা রোপন করেছি। গত কয়েক দিনে ১০০ শতাংশ ভূট্টা পানিতে তলিয়ে গেছে এবং আরো ৫০ শতাংশের ভূট্টা শীঘ্রই তলিয়ে যাবে।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ খলিলুর রহমান জানান,সাটুরিয়া উপজেলায় ২১৬১হেক্টর জমিতে ভূট্টার আবাদ হয়েছে। তবে অসময়ের জোয়ারের পানিতে বিভিন্ন এলাকার ভূট্টা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকের মারাত্মক ক্ষতি হবে।
Facebook Comments