সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের হড়িনা পিপুলবাড়িয়া বাজারে প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে প্রাথমিক চিকিৎসক (সি,এইচ,ডাব্লিউ) পরিচয় দিয়ে নাজমুল হুদা মিঠু নামের সেই কথিত ডাক্তার এখনো রোগী দেখছেন।
বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে সে বিভিন্ন মহলে গিয়ে তদবির শুরু করেছে। এলাকাবাসী এই কথিত ডাক্তার নাজমুল হুদা মিঠু কে বারবার নিষেধ করার পরেও সে প্রকাশ্যে এই অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বলেন, হড়িনা পিপুলবাড়িয়া বাজারে বেশ কয়েক বছর যাবত নাজমুল হুদা মিঠু ডাক্তার না হয়েও ডাক্তার সেজে রোগী দেখছেন। নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে বছরের পর বছর রোগী দেখছেন। ডাক্তার না হয়েও চিকিৎসাপত্রে রোগীর ঔষধ, বিভিন্ন পরীক্ষাসহ বিভিন্ন রোগের জটিল ও কঠিন চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন হাসপাতাল, প্যাথলজিতে রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন বড় ধরনের কমিশন। পিপুলবাড়ীয়া বাজার একটি প্যাথলজীর সাথে পরিক্ষা নিরিক্ষার জন্য তার সাথে কমিশনের লেনদেন হয়ে থাকে। প্রায় গত ৫বছর ধরে ডাক্তার না হয়েও রোগী দেখছেন ডাক্তার সেজে নিয়মিতিই।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের হড়িনা পিপুলবাড়িয়া বাজারে প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার নামে একটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান খুলে প্রাথমিক চিকিৎসক (সি,এইচ,ডাব্লিউ) পরিচয় দেয়া নাজমুল হুদা মিঠু নামে সেই কথিত ডাক্তার ৫০ থেকে ১০০টাকা ভিজিট নিয়ে দিনে শতাধিক রোগী দেখেন বলেও জানা গেছে।
তার হেলথ কেয়ার সেন্টারেই ২টি শয্যা পেতে সেখানেই রোগীদের স্যালাইন দেয়া থেকে নানান রকমের চিকিৎসাও দিয়ে থাকেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কথিত ডাক্তার নাজমুল ইসলাম মিঠু তার নিজ প্রতিষ্ঠানে বসে রোগী দেখছেন। অন্তত আরও দশ থেকে বারো জন রোগী অপেক্ষায় আছেন। করোনার এই ক্রান্তিলগ্নে তারকাছে আসা বেশিরভাগ রোগীই ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত হলেও ডাক্তার সহ কোনো রোগীরই মুখে নেই মাস্ক। কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা নেই নূনতম সামাজিক দূরত্ব পর্যন্তও। রুমের ভিতরেই পর্দার আড়ালে স্থাপন করা ২টি শয্যায় দুজন রোগীকে দেয়া হয়েছে স্যালাইনও। রোগীদের ইচ্ছেমতো লিখছেন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এন্টিবায়োটিক।
তবে আপনি কি ডাক্তার বা আপনার শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন সি.এইচ.ডাব্লিউ ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকি। তবে সি.এইচ.ডাব্লিউ ডাক্তার কিনা তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি। এবং আপনি এন্টিবায়োটিক লিখতে পারেন কিনা জানতে চাইলে বলেন অবশ্যই লিখতে পারি। গত ৫বছর ধরে ডাক্তার সেজে তিনি নিয়মিত জটিল জটিল রোগী দেখছেন নিজের চেম্বারে বসে।
যদিও তার বক্তব্যের পুরো উল্টো মত দিলেন সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন।
এবং তিনি সিরাজগঞ্জের একটি বে-সরকারি প্যারামেডিকেলে ১বছরের কোর্স করেছেন বললেও তিনি তার প্রেসক্রিপশনে উল্ল্যেখ করেছেন সি.এইস.ডাব্লিউ ঢাকা। এমনকি বোর্ডে একজন প্যারামেডিক হিসাবেও জহির করেছেন। তবে এসকল বিষয়ে কোনো উত্তর সঠিক উত্তর দিতে পারিনি।
তবে সচেতন নাগরিক ও এলাকাবাসীদের দাবী তেমন কোনো যোগ্যতা ও চিকিৎসার অনুমতি না থাকলেও এভাবে টাকার উদ্দ্যেশ্যে শয্যা বানিয়ে ও এন্টিবায়োটিকের মাধ্যমে অপ-চিকিৎসা চলতে থাকলে যেকোনো মূহুর্তেই ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দূর্ঘটনা, রোগীর হতে পারে মৃত্যুও।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এটা সম্পুর্ন অন্যায়। আর রেজিস্টার্ড কোনও চিকিৎসক ছাড়া কেও এন্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইপ কররে পারেন না। এরকম কোনো অভিযোগ ও সত্যতা পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।
Facebook Comments